হুটহাট করেই রিডিং ব্লক ধরে মাঝেমধ্যে। হাতে একের পর এক বই,পাতা উলটে যাই, মন বসেনা। খারাপ লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। ঠিক সেইসব মনখারাপ করা মুহূর্তগুলো ভালো করে কিশোরবেলার এই বই
বইপাড়ায় টেনিদা এক পরিচিত চরিত্র। তবে আমার সাথে টেনিদার কালি-কাগজে পরিচয় এই প্রথম। বাতিঘরে গিয়ে একদিন টেনে নিয়েছিলাম নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'চারমূর্তি' নামের বইটা। কিন্তু তখনও জানতাম না স্বয়ং টেনিদা এই বইয়ের মুখ্য চরিত্র। সেদিন অবশ্য কয়েক পাতা পড়ার পর সময় স্বল্পতায় উঠে আসতে হয়েছিল। এরপর বেশ ক'বার বাতিঘর গিয়েও বইটা খুঁজে পাইনি। শেষমেশ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে বইটা নিজের করে নিলাম। পটলডাঙার চারমূর্তি-টেনিদা,প্যালা,ক্যাবলা আর হাবুল সেন। ম্যাট্রিক শেষ করে যখন অলস সময় পার করছিল তখনই ক্যাবলার মেসোমশাইয়ের দাওয়াতে চলে যায় ঝণ্টিপাহাড়ে মেসোর বাংলোয়। কিন্তু সেখানে নাকি ভূত আছে। "পরাজয়ে ডরে না বীর" ভাবনার মতো "ভূতের ভয়ে দমবে না বীর" ভাব নিয়ে রওনা তো দিয়ে দিলো কিন্তু ভূতের ভয় কি সত্যিই পেয়েছিল? বইটা কিশোর বয়সে পড়লে হয়তো বেজায় মজা পেতাম। অনেকের কাছেই শুনলাম হেসে লুটোপুটি খেয়ে গেছেন। বুড়োকালে এখানের অনেক কিছুই বিরস লাগল।কিন্তু হাসির খোরাক ছিলনা একথা বলবো না। বইয়ের অনেক জায়গাতেই মিটমিটিয়ে হেসেছি। তবে শেষদিকে এসে বেশ মজা পেয়েছি। কেমন একটু এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার ভাব চলে এলো! ব্যক্তিভেদে বইয়ের স্বাদ ভিন্ন রকম হতে পারে। যারা এখনো টেনিদার সাথে পরিচিত হননি টুকুশ করে ছোট এই বইটি পড়ে দেখতে পারেন। হয়তো আপনারাও হেসে লুটোপুটি খাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবেন।
মনে আছে স্কুলের ফাইনাল শেষের শীতের দুপুরগুলোর কথা? দুপুরের শেষভাগ থেকে বিকেল আসার সময়টায় আকাশে যখন হালকা রোদ্দুর ঘুরপাক খায়, কুয়াশা নামবে নামবে, বাতাসে একটা দুঃখ দুঃখ গন্ধ- তখন কম্বলের নিচে গুটিসুটি মেরে গল্পের বইয়ের পাতার পর পাতা উল্টে যাওয়া রুদ্ধশ্বাসে!কখনো ফেলুদা, কখনো তিন গোয়েন্দা,কখনো কাকাবাবুতে ডুব মারা।টেনিদা ঠিক সেই দুপুর ফুরানো বিকেলগুলোর জন্য উপযুক্ত একটা সমগ্র।শীত আসছে।অবসাদ আবার ভিড় করছে।বাইশ বছরের আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে 'চার মূর্তি' পড়তে পড়তে শব্দ করে হাসছি।হুট করে মনে পড়লো-সময় মানবমনের চেয়েও নিষ্ঠুর এক কারিগর।'অপেক্ষা'কে সে চেনেনা।সেই ব্যাডমিন্টন কিংবা বরফ পানির বিকেলগুলো আর ফেরেনা, একত্রিশে ডিসেম্বরে পাবলিশ হওয়া রেজাল্টের ভয়ে আত্মা শুকায়না,সন্ধ্যেবেলার ফুচকা আড্ডা বসেনা,সত্যিকারের হাসিমুখেরা তাড়া করেনা, সময়ের লুপহোল আর চলেনা...
চার মূর্তি পটলডাঙার বিখ্যাত বা লোকসমাজে কুখ্যাত চার চারটে কিম্ভূতকিমাকার শরীরে স্বভাবে মেজাজে একদমই মিল নেই এমন চারজনের গল্প;টিকালো নাকের টেনিদা,প্যালাজ্বরের প্যালা,ঢাকাইয়া হাবুল আর কাজে কৌশলী কেতাদুরস্ত ক্যাবলার গল্প।
সারাদিন কাজের মধ্যে দুই ;খাই আর আড্ডা দিতে দিতে দিনের শেষে বাড়ি গিয়ে শুই এই দুটো কাজ ছাড়া এক ক্যাবলা আর হাবুলের পড়াশোনার জন্য ফি বছর প্রমোশনের সাথে একজামিনারের বিষদৃষ্টি কিংবা টেনিদার মতে তার সুকীর্তির জন্য বছরান্তে একই ক্লাসে পড়ে থেকে পরাজয়ে ডরে না বীর প্রবাদ বাক্যের মান রেখে চলছে।প্যালাজ্বরে চমকে ওঠার পিলের জন্যই হোক বা মাথার মধ্যে পড়া বাদে পৃথিবীজোড়া ফন্দিফিকিরে বন্দী প্যালাই হলো ভজহরি মুখোজ্জে্য একমাত্র আদর্শ সঙ্গী।
চারমুখী স্বভাবের এই চারটি প্রাণীর ঝন্টিপাহাড়ে ঝটিকা সফরের যে ধুন্ধুমার কান্ড কারখানায় শেষ মেষ বাবা ঘুটঘুটানন্দ ,গজেশ্বর আর শেখ ঢুন্ডুরামের জাল নোটের যে জারিজুরি ফাঁস হয়েছে তাতে কেউ কোনদিন আগেভাগে না বললে বুঝতেই পারবে না ইহা না কি টেনিশর্মার গড়ের মাঠে গোরা পিটিয়ে চ্যাম্পিয়ান হওয়ার প্রথম গল্প।
সময় সুযোগ হলে ঐ লাল পলাশের আগুনের ফাগুনে পাখা মেলে ঢু মারতে পারেন ঝন্টিপাহাড়ের জঙ্গলে। গোবরডাঙার দিব্বি পুরো ব্যাপারটাই,
টিন এজ এডভেঞ্চার। আমি এই ধরনের অনেক গুলো বই পড়েছি। একটা ইংরেজি এবং একটা জার্মান। চারমূর্তি পড়ে আমার বেশ ভাল লেগেছে। লেখক প্রতি পাতাতেই চমক এনেছেন। পুরোটা পড়ে মনে হয়েছে এই বই আমার সিক্সে পড়ার দরকার ছিল। অনেক লেট করে ফেলেছি। কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে কি আর করা। ক্লাস তো মিস করা যায় না।
I don't know what people find in this book. it is not that funny people say it is. Hell, it's not even funny at all. Maybe if I was 13-15 years old it could be a good read but not for young adults. The writer's writing was good though.
বহুদিন বাদে পড়লাম। প্রথমদিকের উপন্যাস, তাতে অ্যাডভেঞ্চার বেশি, টেনিদারা সকলেই এখানে incubation পর্যায়ে। সবার প্রাণাধিক প্রিয় চারমূর্তি হয়ে উঠতে এখনও কিছুটা সময় আছে। কোথাও গিয়ে তাই ভালো লাগে, আবার লাগেও না। তিন, সাড়ে-তিন তারা আরকি। পারলে ছবিটাও দেখে নিন।