পটলডাঙার বিখ্যাত চারমূর্তি টেনিদা, পালাজ্বরে ভোগা প্যালারাম, ঢাকাইয়া হাবুল, পরিক্ষায় ফার্স্ট হওয়া ক্যাবলার প্রথম বই চারমূর্তি। বাজারে এমন অনেক বই পাওয়া যায় যার প্রচ্ছদে লেখা ১০১ দমফাটানো হাসির গল্প, কিন্তু আদতে হাস্যরস উদ্রেগকারি সেরকম কিছুই থাকে না সেখানে। এ বই পড়েও যে একেবারে হো হো করে হেসে উঠেছি, তা বলব না, তবে প্রতি পৃষ্ঠাতেই হাসির উপাদান আছে। পটল আর শিঙে মাছের ঝোল খাওয়া পালাজ্বরের রুগী প্যালারামের ভাষ্যে গল্পটা পড়তে বেশ লেগেছে।
শেষ কবে কোন বই পড়ে এমন ভাবে হেসেছি মনে করতে পারছি না। :p শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় প্রতিটা ডায়লোগে হাসির উপাদান। আর বিশেষ করে প্যালার ওরকম সহজ সরল বাচনভঙ্গি দেখে আরো মজা লাগলো। আমি ভেবেছিলাম টেনিফা গোয়েন্দা গোছের কেউ হবে। কিন্তু এ দেখি চাপাবাজ!! কেউ হাসতে চাইলে বইটা নিশ্চিন্তে তুলে নিতে পারেন!বাকি বই গুলোও পড়ে ফেলব।
বহুদিন পর মন খুলে হাসলাম। যদিও টেনিদা পড়ার বয়স পেরিয়ে এসেছি অনেক আগেই, তাও প্রথম উপন্যাসটা পড়ে মনে হলো বাকিগুলোও পড়া দরকার। এরপর থেকে মন খারাপ থাকলে আগপিছ না ভেবে সোজা টেনিদা নিয়ে বসবো।
টেনিদাকে নিয়ে এই একটা মাত্র গল্পই পড়া হয়েছে। বাকি গল্পগুলোও পড়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ইন্ডিয়ান বই বাংলাদেশে দূর্লভ হওয়ার কারণে আর পড়া হয় নি। এটি হয়তোবা আর কখনওই পড়া হবে না৷ কারণ, এখন ইন্ডিয়ান বই সংগ্রহের কিঞ্চিৎ পরিমাণ সামর্থ্য থাকলেও এই টেনিদা'কে নিয়ে পড়ার বয়স চুকিয়ে গিয়েছে।
এই গল্পটি আমার বেশ প্রিয়। 'নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়' তার ছোট ছোট পাঠকদের প্রচুর হাসাতে পারে।
বেশ কয়েকদিন থেকে মন খারাপ। বই পড়া তো দূরে থাক,কোন কাজ ঠিক মত করতে পারিনি। মন খারাপ থাকলেও চেষ্টা করি বই পড়ার,তাতে কিছুটা লাভ হয় বটে। কিন্তু এবার তাও করতে মন চাইল না,কারণ হাতের কাছে যে বইগুলো সব কয়টা কেমন জানি কঠিন ঠেকছিল। অগত্যা, একদিন সম্পূর্ণ রকম বই পড়া থেকে বিরত ছিলাম।
কালকে সন্ধ্যায় শুয়ে আছি, হঠাৎ চোখ গেল টেনিদা সমগ্রের উপর। টেনিদা'র গল্পগুলো আগে পড়া ছিল,কিন্তু উপন্যাস একটাও পড়া হয়নি। ভাবলাম,একটা উপন্যাস পড়ি কারণ গল্পগুলো পড়ে বেশ মজা পাইছিলাম।
যেই ভাবা, সেই কাজ। শুরু করলাম " চারমূর্তি "। একটানা ৫০ পৃষ্ঠা পড়ে নিলাম। বাকিটুকু সকালে উঠেই শেষ করলাম। যতক্ষন পড়েছি,হাসতে হাসতে শেষ। বিশেষ করে প্যালার কান্ডগুলো। এত চমৎকার এবং রসগর্ভ বর্ননা যে পাঠক হাসতে বাধ্য। দারুণ, দারুণ।
গল্প নিয়ে কিছু বললাম না,কারণ এটা সবার পড়া হয়ে গেছে অনেক আগেই।