Community Reviews

Rating(4 / 5.0, 99 votes)
5 stars
32(32%)
4 stars
35(35%)
3 stars
32(32%)
2 stars
0(0%)
1 stars
0(0%)
99 reviews
April 17,2025
... Show More
This book is interesting but definitely has two halves.
Chapters 1-13 are a fascinating look at the history of genetics and Bryan's groundbreaking work on using mitochondrial DNA (mDNA) to trace genetic history. The book focuses on the 7 women who are the ancestral mothers of the majority of Europeans.
Chapters 14-22 are his imagining of each woman's life. I found it a little jarring given how factual the rest of the book is.
The last few chapters briefly discuss the rest of the world.

On the whole I would recommend it.

I was disappointed that he credited Watson and Crick with the discovery of the 3D model of DNA using x-rays, but does not mention Rosalind Franklin who actually took those x-rays.
April 17,2025
... Show More
Big fat meh. I didn't find it particularly well-written or engrossing and I really didn't enjoy the fictional bits. I know Sykes was trying to make the 7 daughters of Eve more real, easier to relate to, but I found it trite and a little nauseating. I've read other books on genetics and found them much more interesting and informative, for some reason this one just slid off my face. The only thing I found truly interesting was the mention of race at the end (literally 5 pages before the end!) and I do wish there had been much more about the concept of race and the role the mitochondrial DNA and genetics in general could have in order to dispel this myth of race as skin colour/ethnicity/anything easily identifiable. The implications of that are much more interesting in my opinion than these ancestors of ours coming out of the woodwork and feeling a sense of identity with some woman from 30,000 years ago. My apologies, I just don't feel it. I appreciate Sykes' passion for his work and science but I didn't enjoy his writing much.
April 17,2025
... Show More

The first half of this book gives an excellent and detailed description of Bryan Sykes’ thrilling investigative journey whereby he uncovers findings and develops his theory regarding mitochondrial DNA, DNA that is passed down from mother to child that, according to Sykes, can give us a record back through our mothers due to measurable degrees of mutation.

While reading this book, keep in mind that, according to the author himself, the fictitious representations of the "Seven Daughters of Eve" are just that, fictitious. Sykes is not saying that DNA can tell us anything nearly so detailed as the daily life of an individual who lived thousands of years ago. Bill Bryson, in his book "A Short History of Nearly Everything" appeared to be under an opposite impression that belied his ever having read Sykes’ work. In fact, if you so desire, you may simply ignore the second half of this book as unnecessary filler, an act I wish I had done myself. Had the book lacked this superfluous section, I would have given it four stars instead of three.
April 17,2025
... Show More
Uses genetic (DNA) markers to help trace just 7 of maybe 40 branches of the first Mitochondrial Eve. Very interesting.
April 17,2025
... Show More
الكتاب الثاني لبراين سايكس ودائما ما يبهرني باسلوبه وطرحه لموضوع علمي بشكل أدبي وروائي
من أفضل ما قرأت
أنصح جدا بقراءته
n  n
April 17,2025
... Show More
A captivating exploration of human genetics and our ancient ancestry.

Sykes, a renowned geneticist, takes readers on a journey through time and DNA to uncover the fascinating story of our origins.

The book introduces readers to the concept of mitochondrial DNA, passed exclusively from mothers to their offspring, and how it can be used to trace the maternal lineage of modern humans.

Sykes identifies seven distinct mitochondrial DNA lineages, which can be traced back thousands of years to seven women who lived in different parts of the world.

Sykes masterfully combines scientific research with a sense of discovery and adventure, making complex genetic concepts accessible to the general reader.

A nice read for those who find this kind of science interesting
April 17,2025
... Show More
Written in simple language for non-geneticists and a beautiful wrapping up of the theme at the end with a hypothesized lives of our maternal ancestors. I loved this book and how much I learned so much more than I thought I would. Highly recommend to anyone remotely interested in: ancestry, genetics, and what links us humans all together.
April 17,2025
... Show More
Through mitochondrial genetics, Dr Bryan Sykes was able to retrace the migrations of Polynesian settlers, rewrite European prehistory, and even solve the mystery of Tsar Nicholas II. His most notable achievement, however, is his identification of seven individual women from prehistory who, when combined, birthed the ancestors of every single human being now living on planet earth. He christened them The Seven Daughters of Eve.

For the sake of simplicity, Dr. Sykes has given each of these Seven Daughters (also called “clan mothers”) modern names: Jasmine, Katrine, Tara, Velda, Helena, Xenia, and Ursula. Personally, I would have gone with a much different set of monikers—maybe Aretha, Carmen, Adele, Frida, Rosa, Zora, and Beyoncé—but I digress.

As an added bit of interest and interaction, those who know their maternal haplogroup (mine is U5a1b) can discover which clan mother they’re most directly descended from. I am team Ursula (aka Beyoncé).

Where Dr Sykes loses me comes about 200 pages in when he decides to give all the clan mothers elaborate, completely made-up back stories—what he calls “imagined lives.” For example, one accidentally invents the canoe and another domesticates a wolf. This, for me, is where The Seven Daughters of Eve shifts from intriguing science to oddly unnecessary historical fiction. It’s a literary experiment that falls flat.

But don’t let this deter you from reading this book. The fascinating first parts are well worth the discomforting and confusing last bits. 3.5 stars, rounded up.
April 17,2025
... Show More


ব্রিটিশ জিন বিজ্ঞানী ব্রায়ান সাইকসের বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ বই দ্যা সেভেন ডটারস অফ ইভ। ২০ বছরেরও বেশী আগে প্রকাশিত এ বই আজকের দিনে বেশ অনেকটাই অচল। এই ২০ বছরে জিন প্রযুক্তি লাফিয়ে লাফিয়ে এত এগিয়ে গেছে যে এ বইয়ের অনেক আলোচনাই হয় বড্ড পুরনো, এবং “বালখিল্য” হয়ে গেছে, নয়তো আগাগোড়া ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বইটির কথা প্রথম যখন জানতে পেরেছিলাম, এটি পড়বার এক অদম্য ইচ্ছে আমাকে গিলে খাচ্ছিলো, পড়ে ফেলবার পর এখন বেশ অনেকটাই আফসোস হচ্ছে! তবে বইটি ফেলনা নয় কোনভাবেই; ২০০১ সালে প্রকাশের পর যথেষ্ঠই সাড়া ফেলেছিলো সেভেন ডটারস। আমি বইটি পড়ে যা যা জানতে পেলাম তার চুম্বক অংশ এখানে নোট করে টুকে রাখছি স্রেফ।

সাইকস মূলত গবেষণা করছিলেন অস্টিওজেনেসিস ইম্পার্ফেক্টা নামক একটি ভীষণ দুরারোগ্য রোগ নিয়ে। কিছু কিছু নবজাতক শিশুদের মাঝে এ রোগটি দেখা যায়; তাদের হাড় এতই নরম থাকে যে যখন শিশুটি বুক ভরে তার প্রথম শ্বাসটি নেয়, তার বুকের পাঁজরের হাড়গুলো বাতাসের সে চাপে সঙ্গে সঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এতেই শ্বাসরোধ হয়ে এই শিশুরা মৃত্যুবরণ করে। আমাদের হাড়ে কোলাজেন নামক এক ধরণের প্রোটিন আছে, হাড়ের শক্ত কাঠামোর জন্য এই প্রোটিনটিই দায়ী। কনক্রিটের স্থাপনায় স্টিলের রড যে কাজটি করে, হাড়ের ভেতর কোলাজেন ঠিক তা-ই করে। এই কোলাজেনের জিনের ছোট একটু ত্রুটি বিচ্যুতি থেকেই ভয়ানক এই রোগটির উদ্ভব। শত হাজার বছর ধরে মৃত প্রাণীর হাড় থেকে যে কার্বন ডেটিং করা যায় সেটিও সম্ভব হয় এই কোলাজেনের কার্বনের জন্যই। প্রোটিন তৈরী হয় বিভিন্ন রকম অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে; এই অ্যামাইনো অ্যাসিডের ক্রমটি কেমন হবে, কার পরে কে বসবে সেটি নির্ভর করে জিনের ভেতর ডিএনএ কিভাবে সজ্জিত আছে তার ওপর। যার যেখানে বসবার কথা, সে সে জায়গা থেকে নড়ে গেলেই ঘটে যায় মহা বিপত্তি।

১৯৯১ সালে অস্ট্রিয়া এবং ইটালীর সীমানায় অটজটাল আল্পস পাহাড়ী এলাকায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছর পুরনো এক মমি পাওয়া যায়, যার ডিএনএ অনুসন্ধানের দায়িত্ব এসে পড়ে সাইকসের ওপর। এই মমিটি আজ অব্দি সবচেয়ে পুরনো প্রাকৃতিকভাবে তৈরিকৃত মমি হিসেবে স্বীকৃত এবং এর নাম দেয়া হয়েছে অজি দ্যা আইসম্যান। যে সময়টাতে সাইকসরা তাঁদের গবেষণা করছিলেন, সেই নব্বইয়ের দশকে জিন প্রকৌশল সবে হাঁটি হাঁটি পা পা করছে; যে সব পরীক্ষা তখন তাঁরা চালাচ্ছেন, আজ সেগুলো খুবই সহজ এবং খেলো হয়ে গেছে। সে সময়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিলো ডিএনএ সবসময় শূণ্যের ৭০ ডিগ্রী নিচে তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়, ঘরোয়া তাপমাত্রায় আনলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডিএনএ’র গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়, তাই তা ফেলে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। হাজার হাজার বছর ধরেও যে মমিতে ডিএনএ অবিকৃত থাকতে পারে, এটি একটি অসম্ভব চিন্তা ছিলো সে সময়ে। সাইকসরা তবুও একটি সুযোগ নেন। দাঁত বা হাড়ে ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সিঅ্যাপেটাইট-এর রূপে থাকে। এই হাইড্রক্সিঅ্যাপেটাইট মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরেও অবিকৃত থাকতে পারে, তাই সাইকস তাঁর অনুসন্ধান শুরু করেন আইসম্যানের হাড় থেকে।

আইসম্যানের হাড়ের ক্যালসিয়াম সরাবার পর যে প্রোটিন থাকে সেটিকে একটি এনজাইম দিয়ে দূর করা হয়। এনজাইম মূলত একধরনের অণুঘটক, যা জৈবিক বিক্রিয়াগুলোকে ত্বরান্বিত করে। এরপর ক্লরোফর্ম প্রয়োগ করে সরানো হয় চর্বি। সবশেষে ফেনল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয় আইসম্যানের নমুনা। ক্লোরোফর্ম, এবং কার্বলিক সাবানের মূল ভিত্তি ফেনল-উভয়েরই ভয়ানক রাসায়নিক দ্রব্য হিসেবে (কু)খ্যাতি রয়েছে তবে আশার কথা হলো এরা কেউই ডিএনএ’র গুনাগুণ নষ্ট করতে পারে না। আইসম্যানের নমুনা টিউবে নিয়ে এবার মেশানো হয় পলিমেরাইজ নামক আরেকটি এনজাইম যা ডিএনএ’র নকল কপি বানানো শুরু করে। একে বলা হয় পলিমেরাইজ চেইন রিঅ্যাকশন বা সংক্ষেপে পিসিআর। কোভিড শনাক্তকরণে রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয় আজ এই পিসিআর ব্যবহার করেই। সাইকসের দল আইসম্যানের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ নিয়ে কাজ শুরু করেন। কেন নিউক্লিয়ার ডিএনএ না নিয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ? সে প্রশ্নের উত্তর আসছে শিগগীরই, তবে আপাতত এইটুকুই বলে রাখা যায় যে, এই বই প্রায় পুরোটাই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র কেরামতি নিয়ে!

প্রায় সাড়ে ২৩০০ বছর আগে অ্যারিস্টটল ধারণা করেছিলেন, সন্তান কেমন হবে সেটি নির্ধারণ করে দেয় পিতা; মায়ের কাজ শুধুই সন্তানকে গর্ভের ৯ মাস যত্নে লালন করা, এবং জন্মের পর খাওয়ানো দাওয়ানো। যদি পিতার ছাঁচেই সন্তান হয়, তাহলে পুরুষ মানুষের কন্যাসন্তান কেন হয়-এ প্রশ্ন তখন অ্যারিস্টটলকে করা হয়। অ্যারিস্টটল উত্তর দেন সন্তানের সকল বৈশিষ্ট্য, লিঙ্গ সমেত, সম্পূর্ণভাবে পিতার ওপর নির্ভরশীল। সকল ভ্রুণই আসলে পুরুষ, কিন্তু গর্ভে থাকবার সময় কোন ত্রুটি বিচ্যুতির কারণেই সে ভ্রুণটি বিকৃত হয়ে কন্যার ভ্রুণে পরিণত হয়। আজ আমরা জানি, সন্তান মায়ের কাছ থেকে এক প্রস্ত, এবং বাবার কাছ থেকে আরেক প্রস্ত ক্রোমোজম পেয়ে দু’জনেরই বৈশিষ্ট্য একটু একটু করে ধারণ করে। ক্রোমোজমের ডিএনএতে ২০টি ভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড একের পর এক বিভিন্ন ক্রমে বসে। এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর কিছু কিছু আমাদের নিত্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যেই আছে, যেমন ফেনাইলঅ্যানাইনঃ ডায়েট সোডায় কৃত্রিম চিনি হিসেবে যে অ্যাসপার্টামি দেয়া হয় তার অন্যতম উপকরণ। বাবা-মা’র জিনে এই অ্যামাইনো অ্যাসিডেরা কি ক্রমে রয়েছে সেটিই নির্ধারণ করে দেয় কেমন হবে সন্তানের বৈশিষ্ট্যগুলো।

ডিএনএ’র যে চারটি মূল উপকরণ, অ্যাডেনিন (A), সাইটোসাইন (C), গুয়ানাইন (G), এবং থাইমাইন (T), এরা ATG TGA CGT TCA ইত্যাদি বিভিন্ন ত্রয়ী বানিয়ে এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরী করে, যেমন, ATG তৈরী করে মেথায়োনাইন, ACC করে থেরোনাইন, TCC সেরাইন, TTC ফেনাইলঅ্যানাইন…ইত্যাদি। এমন এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড একের পর এক বসার ফলে তৈরী হয় এক একটি প্রোটিন। মাথার চুল টেনে উপড়ে আনলে আমরা চুলের এক মাথায় যে সাদা গোল পুটুলিস্বরুপ ফলিকেল দেখতে পাই, তা মূলত কেরাটিন নামক একটি প্রোটিন যার ডিএনএ ক্রম হলো ATGACCTCCTTC; কেরাটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলো সজ্জিত থাকে ATG-ACC-TCC-TTC-এমন একটি ক্রমে। এই A, C, G, Tরা কে কার সাথে বসবে তারও বাঁধা নিয়ম রয়েছে। A শুধু T-এর সাথেই বসে, আর কারো সাথে নয়। ঠিক একই ভাবে C এবং G শুধুমাত্র একে অপরের সাথেই বসে, A বা T-এর সাথে নয়। ডিএনএ’র যে ডাবল হেলিক্স গঠন, তার একটি তন্তুর কোড যদি হয় ATTCAG, তাহলে অপর তন্তুটি হবে TAAGTC। এভাবেই ছোট ছোট এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিডের ‘ইঁট’ দিয়ে তৈরী হয় প্রাণীজগতের ইমারত।

ডিএনএ’র সাথে রক্তের গ্রুপের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক; আজ আমরা জানি এক গ্রুপের দাতা অপর গ্রুপের গ্রহীতাকে রক্ত দিতে পারে না, তবে এ জ্ঞানটি বহু প্রাণের বিনিময়ে কিনতে হয়েছে। ১৬২৮ সালে ইতালীতে প্রথম রক্তদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়, কিন্তু ভুল রক্তের গ্রুপের মিশ্রণের ফলে এত মানুষ তখন মারা যায় যে রক্তদানের ব্যাপারটিই তখন আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৮৭৫ সালে আবিষ্কৃত হয় বিভিন্ন প্রাণীর রক্ত একসাথে মেশালে কোষগুলো ছোট ছোট দল পাকিয়ে বিস্ফোরিত হওয়া শুরু করে। এই আবিষ্কারের হাত ধরে ১৯০০ সালে বিজ্ঞানীরা মানুষের রক্তকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করেন: এ, বি, এবি, এবং ও। প্রাচীন ইনকারা বেশ সফলতার সাথে রক্তদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছিলো বলে বেশ কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়। কী করে তারা ইওরোপীয়দেরও ঢের আগে কাজটি করলো? দক্ষিণ আমেরিকার বড় অংশের মানুষেরই আসলে রক্তের গ্রুপ "ও", তাই দাতা ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ “দৈবক্রমে” মিলে গেছে বেশীর ভাগ সময়েই।

উপর্যুক্ত ৪টি রক্তের গ্রুপকে পজিটিভ-নেগেটিভের ভিত্তিতে রেসাস গ্রুপ বলে আরেকটি গ্রুপে ভাগ করা যায়। ১৯৪০-এর দিকে বিজ্ঞানীরা মানুষের রক্তের সাথে খরগোশের রক্ত মেশান, যে খরগোশগুলোর শরীরে আগে রেসাস বাঁদরের কোষ ইঞ্জেকশন দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। এভাবেই রেসাস গ্রুপটির সন্ধান পাওয়া যায়। এই রেসাস জিনের জন্যই নবজাতক শিশুদের মাঝে হিমোলাইটিক ডিজিজ বলে একটি রোগ হয়। মা যদি রেসাস নেগেটিভ হন, অর্থাৎ তাঁর রক্তে রেসাস অ্যান্টিজেন না থাকে (নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ), এবং বাবা যদি রেসাস পজিটিভ হন, অর্থাৎ তাঁর রক্তে রেসাস অ্যান্টিজেন থাকে (পজিটিভ রক্তের গ্রুপ), তাহলে দ্বিতীয় সন্তানের রেসাস পজিটিভ হবার অনেক ঝুঁকি থাকে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে হয় না, কারণ, সন্তানের জন্মের সময় তার কিছু রক্ত কোষ মায়ের শরীরে চলে যায়; মা যেহেতু রেসাস নেগাটিভ, তাই তার শরীর এই রেসাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি বানানো শুরু করে দেয়। দ্বিতীয় সন্তান যখন গর্ভে আসে তখন মায়ের শরীরের সেই অ্যান্টিবডি এই রেসাস পজিটিভ ভ্রুনটিকে শত্রু জ্ঞান করে আক্রমণ করে বসে। এই শিশুরা অক্সিজেনের অভাবে জন্মের পর সচরাচর নীলাভ বর্ণের হয়।

মাইটোকন্ড্রিয়া যে কোষের শক্তি উৎপাদক সে তো আমরা ছোটবেলাতেই জেনেছি। কোষ যতো বেশী অক্সিজেন গ্রহণ করে, তত বেশী শক্তি উৎপাদন করতে পারে। মাইটোকন্ড্রিয়া এই বেশী করে অক্সিজেন গ্রহণ করবার কাজটিতেই সহায়তা করে। আমাদের শরীরের যে উত্তাপ, তার কিছুটার জন্য মাইটোকন্ড্রিয়া দায়ী। মাইটোকন্ড্রিয়ার মূল কাজ শরীরকে ATP সরবরাহ করা; হৃৎপিণ্ডের ওঠানামা, চোখের রেটিনা-যা এই লেখাটি পড়ছে, মস্তিষ্কের কোষ-যা এই লেখাটির অর্থ দাঁড় করাচ্ছে, এই সবগুলো কাজের শক্তি যোগায় ATP। এই মাইটোকন্ড্রিয়ার ঠিক কেন্দ্রে বাস করে একটি বিশেষ ডিএনএ, যাকে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ বলে। নিউক্লিয়ার ডিএনএ থেকে বেশ অনেকটাই আলাদা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র অস্তিত্ব আবিষ্কারটাই বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ অবাক করা একটি ব্যাপার ছিলো। মাইটোকন্ড্রিয়াতে ডিএনএ কিভাবে এলো তার অন্যতম জনপ্রিয় একটি ব্যখ্যা হলো মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগে মাইটোকন্ড্রিয়া আসলে ছিলো স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করে বেড়ানো ব্যাকটেরিয়া বিশেষ, যা অন্য কোষকে আক্রমণ করে ভেতরে জায়গা দখল করে বসে। মাইটোকন্ড্রিয়া পেলো আবাসস্থল, আর কোষ পেলো শক্তি উৎপাদক ATP। কোষ ও মাইটোকন্ড্রিয়া দু’জনই কিছুটা করে দু’জনের পিঠ চুলকে দিচ্ছে; এই সিম্বায়োটিক রিলেশনের জন্যই শেষতক এই ব্যবস্থাটি দাঁড়িয়ে গেলো।

নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজমে যে ডিএনএ থাকে, তা মানুষ বাবা এবং মা, উভয়ের কাছ থেকেই পায়। কিন্তু মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ মানুষ পায় শুধুমাত্র মায়ের কাছ থেকে। ডিম্বাণুর যে বহির্স্তর, সাইটোপ্লাজম, তাতে প্রায় লাখ দশেক মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে। বিপরীতে, শুক্রাণুতে থাকে হাতে গোণা অল্প কয়েকটি মাইটোকন্ড্রিয়া; জরায়ু অব্দি সাঁতার কেটে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাবার জন্য যতটুকু শক্তি প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই এই মাইটোকন্ড্রিয়াগুলো যোগান দেয়, এরপর এদের আর কোন কাজ থাকেনা, তাই তারা স্রেফ ঝরে পড়ে। ডিম্বাণুর ভেতর ঢুকতে পারা সফল শুক্রাণুটি নিউক্লিয়ার ডিএনএ নিয়ে আসে, কিন্তু মায়ের ডিম্বাণুর সাইটোপ্লাজমে তো মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুরু থেকেই বসে ছিলো। এ কারণেই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধুমাত্র মা’র কাছ থেকেই আসে। মা’র মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র একটি নকল কপি পায় মেয়ে, এরপর সেটিরও আরেকটি নকল কপি পায় নাতনি…এভাবে চলতেই থাকে। পুরুষেরাও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ পায় তাদের মায়েদের কাছ থেকে, কিন্তু সেটি তারা তাদের সন্তানদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে না।

মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র ভেতর মিউটেশন বা জিনেটিক পরিবর্তন হয় বটে, তবে এই ডিএনএ’র বিশেষ একটি অঞ্চলে এই মিউটেশন অনেক বেশী হয়, যাকে বলা হয় কন্ট্রোল রিজিয়ন। শরীরের গঠন কেমন হবে তার বিভিন্ন নির্দেশ মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র বিভিন্ন অংশে থাকলেও এই কন্ট্রোল রিজিয়নের এ ক্ষেত্রে তেমন কোন ভূমিকা নেই। কিছু কিছু স্নায়বিক রোগ রয়েছে যেগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশের মিউটেশনের জন্য ঘটে। এ সকল ক্ষেত্রে মাইটোকন্ড্রিয়া এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তা প্রাকৃতিকভাবেই ঝরে পড়ে, পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে আর সে পরিবর্তিত জিনগুলো সঞ্চারিত হয় না। অপরদিকে, কন্ট্রোল রিজিয়ন অংশটির যেহেতু সরাসরি কোন ভূমিকা নেই, তাই তাদের মিউটেশন অব্যাহত থাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। প্রতি দশ হাজার বছরে কন্ট্রোল রিজিয়ন-এর এক একটি মিউটেশন হয়, তাই, যদি দুজন ব্যক্তির কন্ট্রোল রিজিয়ন-এর ডিএনএ’র ক্রমটি হুবহু একই হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে তাঁদের দুজনের যে ‘কমন’ নারী পূর্বপুরুষ রয়েছেন, তিনি গত দশ হাজার বছরের ভেতরের মানুষ ছিলেন।

কিছু কিছু রোগ রয়েছে যা নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলেই বেশী দেখা যায়, যেমন, আফ্রিকার দক্ষিণে সিকল সেল অ্যানিমিয়া (বক্র কোষ রক্তাল্পতা), এবং এশিয়া, ও ইওরোপে থ্যালাসেমিয়া। সিকল সেল অ্যানিমিয়াতে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো বিকৃত আকার ধারণ করে কাস্তের মতো দেখতে হয়। এমন আকারের কারণে বিশেষতঃ সরু রক্তনালীগুলো দিয়ে তারা আর চলাচল করতে পারে না, ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে ভয়ানক এক অবস্থার সৃষ্টি করে। অপরদিকে, থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে লোহিত রক্ত কণিকার ভেতরের হিমোগ্লোবিন জমে পিণ্ড তৈরী করে, যা পরে প্লীহার ভেতরে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। নিয়মিত রক্ত স্থানান্তর করা ছাড়া এর স্থায়ী সমাধান নেই।

প্রশ্ন হলো, এই সিকল-সেল অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া হয় কেন? এর উত্তরঃ ম্যালেরিয়া। প্রতিটি ম্যালেরিয়া-প্রবণ অঞ্চলেই এই দু’টি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী। বাবা এবং মা-উভয়ের কাছ থেকেই এক একটি করে পরিবর্তিত হিমোগ্লোবিন জিন পেলেই সন্তানের এ রোগগুলো হতে পারে। বহু জিনেটিক রোগই এভাবে ছড়ায়; ইওরোপীয়দের ভেতর সবচেয়ে বেশী যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস। যে জীবাণুটি ম্যালেরিয়া ঘটায়, কোন একটি অজানা কারণে তা সিকল সেল অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া’র বাহককে আক্রান্ত করতে পারে না, বরং বাহকের শরীরে এই দু’টি রোগের বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। অপরদিকে, বাহকের শরীরে এই প্রতিরোধের জন্যই পরবর্তী প্রজন্মগুলোর মাঝে এই রোগগুলো ছড়াবার সুযোগ থাকে। প্রকৃতি এভাবেই এক আশ্চর্য নিষ্ঠুর খেলা খেলে নতুন-পুরানের একটি সাম্যাবস্থা বজায় রাখে। ম্যালেরিয়ার কারণেই যেহেতু হিমোগ্লোবিনের জিনের এই মিউটেশনগুলো ঘটে, তাই কোন অঞ্চলকে ম্যালেরিয়া-মুক্ত করে ফেললেও থ্যালাসেমিয়া দূর করা সম্ভব হয় না। সার্ডিনিয়া, ইতালী, গ্রিস, সাইপ্রাস, তুরস্ক ইত্যাদি অঞ্চলে ঠিক তাই-ই হয়েছে। সেখানে ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী মশাটিকে সম্পূর্ণরূপে নিকেশ করে ফেলা হয়েছে, কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে।

বাইবেল-কোরানে আমরা যে আদম-ইভের গল্প পড়ি, তার একটি জিনগত ব্যখ্যা দেয়া সম্ভব! মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ যে আমরা শুধু মা’র কাছ থেকে পাই সে তো আগেই জেনেছি; আমাদের মা’রা পেয়েছেন তাঁদের মায়েদের কাছ থেকে, তাঁরা পেয়েছেন তাঁদের মায়েদের কাছ থেকে্‌…এভাবে পেছনের দিকে ক্রমাগত যেতে থাকলে শেষ পর্যন্ত ২ লাখ বছর ���গে আফ্রিকার একজন মা’র কাছে গিয়েই ঠেকতে হয়, যাঁর হাত ধরে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এসেছে! এই নারীকে বলা হয় ‘মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ’। এই মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ যে পৃথিবীর প্রথম নারী ঠিক তা নয়, সে সময়ে মনুষ্য প্রজাতির আরো নারী নিশ্চয়ই ছিলেন, কিন্তু তাঁদের উত্তরসূরী কন্যারা বা নাতনীরা টিকে থাকতে পারেনি ডারউইনীয় ন্যাচারাল সিলেকশনের জন্যই। ইভের কন্যা, তস্য কন্যা, তস্য তস্য কন্যারা বেঁচে গেছেন বলেই আমরা আসতে পেরেছি-এটাই এখন সবচেয়ে গৃহীত বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা। কিভাবে বিজ্ঞানীরা এই ২ লাখ বছরের হিসেবে আসলেন? সেই যে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র মিউটেশনের হার, প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার বছরে একটি করে মিউটেশন হয়, তার কথা মনে আছে তো? পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের ডিএনএ নমুনায় কতগুলো মিউটেশন আছে সেটি বের করে তার সাথে মিউটেশনের হার গুণ করে তাঁরা এই সময়টা পেয়েছেন। ব্যাপারটি যতো সহজে বলে ফেললাম, অমনও ঠিক নয়, তবে মোটামুটি ধারণাটি এমনই।

মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ-এর হাত ধরে পরবর্তীতে যে নারীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে গত ২ লাখ বছরে নতুন নতুন জনগোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছেন, এদের বলা হয় হ্যাপলোগ্রুপ। সাইকস ধারণা করেছেন ইভ-এর পর ৭ জন নারীর হাত ধরে বাকী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ ছড়িয়েছে, যাদের তিনি ইভের কন্যা বলে অভিহিত করেছেন। এ বইয়ের প্রথমার্ধে জিন বিজ্ঞান নিয়ে যাবতীয় তথ্য প্রদানের পর সাইকস বাকী অর্ধেকে তাঁর সেই কল্পিত ৭ জন নারীর কল্পিত গল্প বলেছেন। সেটুকু পড়া নিতান্তই সময়ের অপচয়। এই শ’খানেক পাতা অতিরিক্ত যোগ করায় বইয়ের বাহ্যিক ওজন বেড়েছে বটে, কিন্তু বইটির গ্রহণযোগ্যতার যে ওজন, সেটি অনেকটাই কমে গেছে।

April 17,2025
... Show More
I enjoyed this look into the evidence of mitochondrial DNA.
The first 2/3's concentrates on the discovery that mitochondrial DNA can be used to look at family trees into the far past and the establishment of the science behind the theory. The author has an "everyday" voice that is easy to follow and understand.
The last third of the book gives each "daughter" a chapter and gives a romanticized account of their life. The topography, animals, living conditions, tools, etc. that is described in these chapters are historically correct but, of course, the actual women's lives aren't. It's a fun way to end the book.
I found this to be a very interesting book.
April 17,2025
... Show More
ব্রিটিশ জিন বিজ্ঞানী ব্রায়ান সাইকসের বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ বই ‘দ্যা সেভেন ডটারস অফ ইভ’। ২০ বছরেরও বেশী আগে প্রকাশিত এ বই আজকের দিনে বেশ অনেকটাই অচল। এই ২০ বছরে জিন প্রযুক্তি লাফিয়ে লাফিয়ে এত এগিয়ে গেছে যে এ বইয়ের অনেক আলোচনাই হয় বড্ড পুরনো, এবং “বালখিল্য” হয়ে গেছে, নয়তো আগাগোড়া ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বইটির কথা প্রথম যখন জানতে পেরেছিলাম, এটি পড়বার এক অদম্য ইচ্ছে আমাকে গিলে খাচ্ছিলো, পড়ে ফেলবার পর এখন বেশ অনেকটাই আফসোস হচ্ছে! তবে বইটি ফেলনা নয় কোনভাবেই; ২০০১ সালে প্রকাশের পর যথেষ্ঠই সাড়া ফেলেছিলো সেভেন ডটারস। আমি বইটি পড়ে যা যা জানতে পেলাম তার চুম্বক অংশ এখানে নোট করে টুকে রাখছি স্রেফ।

সাইকস মূলত গবেষণা করছিলেন অস্টিওজেনেসিস ইম্পার্ফেক্টা নামক একটি ভীষণ দুরারোগ্য রোগ নিয়ে। কিছু কিছু নবজাতক শিশুদের মাঝে এ রোগটি দেখা যায়; তাদের হাড় এতই নরম থাকে যে যখন শিশুটি বুক ভরে তার প্রথম শ্বাসটি নেয়, তার বুকের পাঁজরের হাড়গুলো বাতাসের সে চাপে সঙ্গে সঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এতেই শ্বাসরোধ হয়ে এই শিশুরা মৃত্যুবরণ করে। আমাদের হাড়ে কোলাজেন নামক এক ধরণের প্রোটিন আছে, হাড়ের শক্ত কাঠামোর জন্য এই প্রোটিনটিই দায়ী। কনক্রিটের স্থাপনায় স্টিলের রড যে কাজটি করে, হাড়ের ভেতর কোলাজেন ঠিক তা-ই করে। এই কোলাজেনের জিনের ছোট একটু ত্রুটি বিচ্যুতি থেকেই ভয়ানক এই রোগটির উদ্ভব। শত হাজার বছর ধরে মৃত প্রাণীর হাড় থেকে যে কার্বন ডেটিং করা যায় সেটিও সম্ভব হয় এই কোলাজেনের কার্বনের জন্যই। প্রোটিন তৈরী হয় বিভিন্ন রকম অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে; এই অ্যামাইনো অ্যাসিডের ক্রমটি কেমন হবে, কার পরে কে বসবে সেটি নির্ভর করে জিনের ভেতর ডিএনএ কিভাবে সজ্জিত আছে তার ওপর। যার যেখানে বসবার কথা, সে সে জায়গা থেকে নড়ে গেলেই ঘটে যায় মহা বিপত্তি।

১৯৯১ সালে অস্ট্রিয়া এবং ইটালীর সীমানায় অটজটাল আল্পস পাহাড়ী এলাকায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছর পুরনো এক মমি পাওয়া যায়, যার ডিএনএ অনুসন্ধানের দায়িত্ব এসে পড়ে সাইকসের ওপর। এই মমিটি আজ অব্দি সবচেয়ে পুরনো প্রাকৃতিকভাবে তৈরিকৃত মমি হিসেবে স্বীকৃত এবং এর নাম দেয়া হয়েছে অজি দ্যা আইসম্যান। যে সময়টাতে সাইকসরা তাঁদের গবেষণা করছিলেন, সেই নব্বইয়ের দশকে জিন প্রকৌশল সবে হাঁটি হাঁটি পা পা করছে; যে সব পরীক্ষা তখন তাঁরা চালাচ্ছেন, আজ সেগুলো খুবই সহজ এবং খেলো হয়ে গেছে। সে সময়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিলো ডিএনএ সবসময় শূণ্যের ৭০ ডিগ্রী নিচে তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়, ঘরোয়া তাপমাত্রায় আনলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডিএনএ’র গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়, তাই তা ফেলে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা। হাজার হাজার বছর ধরেও যে মমিতে ডিএনএ অবিকৃত থাকতে পারে, এটি একটি অসম্ভব চিন্তা ছিলো সে সময়ে। সাইকসরা তবুও একটি সুযোগ নেন। দাঁত বা হাড়ে ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সিঅ্যাপেটাইট-এর রূপে থাকে। এই হাইড্রক্সিঅ্যাপেটাইট মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরেও অবিকৃত থাকতে পারে, তাই সাইকস তাঁর অনুসন্ধান শুরু করেন আইসম্যানের হাড় থেকে।

আইসম্যানের হাড়ের ক্যালসিয়াম সরাবার পর যে প্রোটিন থাকে সেটিকে একটি এনজাইম দিয়ে দূর করা হয়। এনজাইম মূলত একধরনের অণুঘটক, যা জৈবিক বিক্রিয়াগুলোকে ত্বরান্বিত করে। এরপর ক্লরোফর্ম প্রয়োগ করে সরানো হয় চর্বি। সবশেষে ফেনল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয় আইসম্যানের নমুনা। ক্লোরোফর্ম, এবং কার্বলিক সাবানের মূল ভিত্তি ফেনল-উভয়েরই ভয়ানক রাসায়নিক দ্রব্য হিসেবে (কু)খ্যাতি রয়েছে তবে আশার কথা হলো এরা কেউই ডিএনএ’র গুনাগুণ নষ্ট করতে পারেনা। আইসম্যানের নমুনা টিউবে নিয়ে এবার মেশানো হয় পলিমেরাইজ নামক আরেকটি এনজাইম যা ডিএনএ’র নকল কপি বানানো শুরু করে। একে বলা হয় পলিমেরাইজ চেইন রিঅ্যাকশন বা সংক্ষেপে পিসিআর। কোভিড শনাক্তকরণে রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয় আজ এই পিসিআর ব্যবহার করেই। সাইকসের দল আইসম্যানের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ নিয়ে কাজ শুরু করেন। কেন নিউক্লিয়ার ডিএনএ না নিয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ? সে প্রশ্নের উত্তর আসছে শিগগীরই, তবে আপাতত এইটুকুই বলে রাখা যায় যে, এই বই প্রায় পুরোটাই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র কেরামতি নিয়ে।

প্রায় সাড়ে ২৩০০ বছর আগে অ্যারিস্টটল ধারণা করেছিলেন, সন্তান কেমন হবে সেটি নির্ধারণ করে দেয় পিতা; মায়ের কাজ শুধুই সন্তানকে গর্ভের ৯ মাস যত্নে লালন করা, এবং জন্মের পর খাওয়ানো দাওয়ানো। যদি পিতার ছাঁচেই সন্তান হয়, তাহলে পুরুষ মানুষের কন্যাসন্তান কেন হয়-এ প্রশ্ন তখন অ্যারিস্টটলকে করা হয়। অ্যারিস্টটল উত্তর দেন সন্তানের সকল বৈশিষ্ট্য, লিঙ্গ সমেত, সম্পূর্ণভাবে পিতার ওপর নির্ভরশীল। সকল ভ্রুণই আসলে পুরুষ, কিন্তু গর্ভে থাকবার সময় কোন ত্রুটি বিচ্যুতির কারণেই সে ভ্রুণটি বিকৃত হয়ে কন্যার ভ্রুণে পরিণত হয়। আজ আমরা জানি, সন্তান মায়ের কাছ থেকে এক প্রস্ত, এবং বাবার কাছ থেকে আরেক প্রস্ত ক্রোমোজম পেয়ে দু’জনেরই বৈশিষ্ট্য একটু একটু করে ধারণ করে। ক্রোমোজমের ডিএনএতে ২০টি ভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড একের পর এক বিভিন্ন ক্রমে বসে। এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর কিছু কিছু আমাদের নিত্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যেই আছে, যেমন ফেনাইলঅ্যানাইনঃ ডায়েট সোডায় কৃত্রিম চিনি হিসেবে যে অ্যাসপার্টামি দেয়া হয় তার অন্যতম উপকরণ। বাবা-মা’র জিনে এই অ্যামাইনো অ্যাসিডেরা কি ক্রমে রয়েছে সেটিই নির্ধারণ করে দেয় কেমন হবে সন্তানের বৈশিষ্ট্যগুলো।

ডিএনএ’র যে চারটি মূল উপকরণ, অ্যাডেনিন (A), সাইটোসাইন (C), গুয়ানাইন (G), এবং থাইমাইন (T), এরা ATG TGA CGT TCA ইত্যাদি বিভিন্ন ত্রয়ী বানিয়ে এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরী করে, যেমন, ATG তৈরী করে মেথায়োনাইন, ACC করে থেরোনাইন, TCC সেরাইন, TTC ফেনাইলঅ্যানাইন…ইত্যাদি। এমন এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড একের পর এক বসার ফলে তৈরী হয় এক একটি প্রোটিন। মাথার চুল টেনে উপড়ে আনলে আমরা চুলের এক মাথায় যে সাদা গোল পুটুলিস্বরুপ ফলিকেল দেখতে পাই, তা মূলত কেরাটিন নামক একটি প্রোটিন যার ডিএনএ ক্রম হলো ATGACCTCCTTC; কেরাটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলো সজ্জিত থাকে ATG-ACC-TCC-TTC-এমন একটি ক্রমে। এই A, C, G, Tরা কে কার সাথে বসবে তারও বাঁধা নিয়ম রয়েছে। A শুধু T-এর সাথেই বসে, আর কারো সাথে নয়। ঠিক একই ভাবে C এবং G শুধুমাত্র একে অপরের সাথেই বসে, A বা T-এর সাথে নয়। ডিএনএ’র যে ডাবল হেলিক্স গঠন, তার একটি তন্তুর কোড যদি হয় ATTCAG, তাহলে অপর তন্তুটি হবে TAAGTC। এভাবেই ছোট ছোট এক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিডের ‘ইঁট’ দিয়ে তৈরী হয় প্রাণীজগতের ইমারত।

ডিএনএ’র সাথে রক্তের গ্রুপের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক; আজ আমরা জানি এক গ্রুপের দাতা অপর গ্রুপের গ্রহীতাকে রক্ত দিতে পারেনা, তবে এ জ্ঞানটি বহু প্রাণের বিনিময়ে কিনতে হয়েছে। ১৬২৮ সালে ইতালীতে প্রথম রক্তদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়, কিন্তু ভুল রক্তের গ্রুপের মিশ্রণের ফলে এত মানুষ তখন মারা যায় যে রক্তদানের ব্যাপারটিই তখন আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৮৭৫ সালে আবিষ্কৃত হয় বিভিন্ন প্রাণীর রক্ত একসাথে মেশালে কোষগুলো ছোট ছোট দল পাকিয়ে বিস্ফোরিত হওয়া শুরু করে। এই আবিষ্কারের হাত ধরে ১৯০০ সালে বিজ্ঞানীরা মানুষের রক্তকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করেন, এ, বি, এবি, এবং ও। প্রাচীন ইনকারা বেশ সফলতার সাথে রক্তদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছিলো বলে বেশ কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়। কি করে তারা ইওরোপীয়দেরও ঢের আগে কাজটি করলো? দক্ষিণ আমেরিকার বড় অংশের মানুষেরই আসলে রক্তের গ্রুপ ও, তাই দাতা ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ “দৈবক্রমে” মিলে গেছে বেশীর ভাগ সময়েই।

উপর্যুক্ত ৪টি রক্তের গ্রুপকে পজিটিভ-নেগেটিভের ভিত্তিতে রেসাস গ্রুপ বলে আরেকটি গ্রুপে ভাগ করা যায়। ১৯৪০-এর দিকে বিজ্ঞানীরা মানুষের রক্তের সাথে খরগোশের রক্ত মেশান, যে খরগোশগুলোর শরীরে আগে রেসাস বাঁদরের কোষ ইঞ্জেকশন দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। এভাবেই রেসাস গ্রুপটির সন্ধান পাওয়া যায়। এই রেসাস ���িনের জন্যই নবজাতক শিশুদের মাঝে হিমোলাইটিক ডিজিজ বলে একটি রোগ হয়। মা যদি রেসাস নেগেটিভ হন, অর্থাৎ তাঁর রক্তে রেসাস অ্যান্টিজেন না থাকে (নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ), এবং বাবা যদি রেসাস পজিটিভ হন, অর্থাৎ তাঁর রক্তে রেসাস অ্যান্টিজেন থাকে (পজিটিভ রক্তের গ্রুপ), তাহলে দ্বিতীয় সন্তানের রেসাস পজিটিভ হবার অনেক ঝুঁকি থাকে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে হয় না, কারণ, সন্তানের জন্মের সময় তার কিছু রক্ত কোষ মায়ের শরীরে চলে যায়; মা যেহেতু রেসাস নেগাটিভ, তাই তার শরীর এই রেসাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি বানানো শুরু করে দেয়। দ্বিতীয় সন্তান যখন গর্ভে আস�� তখন মায়ের শরীরের সেই অ্যান্টিবডি এই রেসাস পজিটিভ ভ্রুনটিকে শত্রু জ্ঞান করে আক্রমণ করে বসে। এই শিশুরা অক্সিজেনের অভাবে জন্মের পর সচরাচর নীলাভ বর্ণের হয়।

মাইটোকন্ড্রিয়া যে কোষের শক্তি উৎপাদক সে তো আমরা ছোটবেলাতেই জেনেছি। কোষ যতো বেশী অক্সিজেন গ্রহণ করে, তত বেশী শক্তি উৎপাদন করতে পারে। মাইটোকন্ড্রিয়া এই বেশী করে অক্সিজেন গ্রহণ করবার কাজটিতেই সহায়তা করে। আমাদের শরীরের যে উত্তাপ, তার কিছুটার জন্য মাইটোকন্ড্রিয়া দায়ী। মাইটোকন্ড্রিয়ার মূল কাজ শরীরকে ATP সরবরাহ করা; হৃৎপিণ্ডের ওঠানামা, চোখের রেটিনা-যা এই লেখাটি পড়ছে, মস্তিষ্কের কোষ-যা এই লেখাটির অর্থ দাঁড় করাচ্ছে, এই সবগুলো কাজের শক্তি যোগায় ATP। এই মাইটোকন্ড্রিয়ার ঠিক কেন্দ্রে বাস করে একটি বিশেষ ডিএনএ, যাকে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ বলে। নিউক্লিয়ার ডিএনএ থেকে বেশ অনেকটাই আলাদা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র অস্তিত্ব আবিষ্কারটাই বিজ্ঞানীদের জন্য বেশ অবাক করা একটি ব্যাপার ছিলো। মাইটোকন্ড্রিয়াতে ডিএনএ কিভাবে এলো তার অন্যতম জনপ্রিয় একটি ব্যখ্যা হলো মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগে মাইটোকন্ড্রিয়া আসলে ছিলো স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করে বেড়ানো ব্যাকটেরিয়া বিশেষ, যা অন্য কোষকে আক্রমণ করে ভেতরে জায়গা দখল করে বসে। মাইটোকন্ড্রিয়া পেলো আবাসস্থল, আর কোষ পেলো শক্তি উৎপাদক ATP। কোষ ও মাইটোকন্ড্রিয়া দু’জনই কিছুটা করে দু’জনের পিঠ চুলকে দিচ্ছে; এই সিম্বায়োটিক রিলেশনের জন্যই শেষতক এই ব্যবস্থাটি দাঁড়িয়ে গেলো।

নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজমে যে ডিএনএ থাকে, তা মানুষ বাবা এবং মা, উভয়ের কাছ থেকেই পায়। কিন্তু মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ মানুষ পায় শুধুমাত্র মায়ের কাছ থেকে। ডিম্বাণুর যে বহির্স্তর, সাইটোপ্লাজম, তাতে প্রায় লাখ দশেক মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে। বিপরীতে, শুক্রাণুতে থাকে হাতে গোণা অল্প কয়েকটি মাইটোকন্ড্রিয়া; জরায়ু অব্দি সাঁতার কেটে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাবার জন্য যতটুকু শক্তি প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই এই মাইটোকন্ড্রিয়াগুলো যোগান দেয়, এরপর এদের আর কোন কাজ থাকেনা, তাই তারা স্রেফ ঝরে পড়ে। ডিম্বাণুর ভেতর ঢুকতে পারা সফল শুক্রাণুটি নিউক্লিয়ার ডিএনএ নিয়ে আসে, কিন্তু মায়ের ডিম্বাণুর সাইটোপ্লাজমে তো মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুরু থেকেই বসে ছিলো। এ কারণেই মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধুমাত্র মা’র কাছ থেকেই আসে। মা’র মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র একটি নকল কপি পায় মেয়ে, এরপর সেটিরও আরেকটি নকল কপি পায় নাতনি…এভাবে চলতেই থাকে। পুরুষেরাও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ পায় তাদের মায়েদের কাছ থেকে, কিন্তু সেটি তারা তাদের সন্তানদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেনা।

মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র ভেতর মিউটেশন বা জিনেটিক পরিবর্তন হয় বটে, তবে এই ডিএনএ’র বিশেষ একটি অঞ্চলে এই মিউটেশন অনেক বেশী হয়, যাকে বলা হয় কন্ট্রোল রিজিয়ন। শরীরের গঠন কেমন হবে তার বিভিন্ন নির্দেশ মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র বিভিন্ন অংশে থাকলেও এই কন্ট্রোল রিজিয়নের এ ক্ষেত্রে তেমন কোন ভূমিকা নেই। কিছু কিছু স্নায়বিক রোগ রয়েছে যেগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশের মিউটেশনের জন্য ঘটে। এ সকল ক্ষেত্রে মাইটোকন্ড্রিয়া এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তা প্রাকৃতিকভাবেই ঝরে পড়ে, পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে আর সে পরিবর্তিত জিনগুলো সঞ্চারিত হয় না। অপরদিকে, কন্ট্রোল রিজিয়ন অংশটির যেহেতু সরাসরি কোন ভূমিকা নেই, তাই তাদের মিউটেশন অব্যাহত থাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। প্রতি দশ হাজার বছরে কন্ট্রোল রিজিয়ন-এর এক একটি মিউটেশন হয়, তাই, যদি দুজন ব্যক্তির কন্ট্রোল রিজিয়ন-এর ডিএনএ’র ক্রমটি হুবহু একই হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে তাঁদের দুজনের যে ‘কমন’ নারী পূর্বপুরুষ রয়েছেন, তিনি গত দশ হাজার বছরের ভেতরের মানুষ ছিলেন।

কিছু কিছু রোগ রয়েছে যা নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলেই বেশী দেখা যায়, যেমন, আফ্রিকার দক্ষিণে সিকল সেল অ্যানিমিয়া (বক্র কোষ রক্তাল্পতা), এবং এশিয়া ও ইওরোপে থ্যালাসেমিয়া। সিকল সেল অ্যানিমিয়াতে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো বিকৃত আকার ধারণ করে কাস্তের মতো দেখতে হয়। এমন আকারের কারণে বিশেষতঃ সরু রক্তনালীগুলো দিয়ে তারা আর চলাচল করতে পারেনা, ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে ভয়ানক এক অবস্থার সৃষ্টি করে। অপরদিকে, থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে লোহিত রক্ত কণিকার ভেতরের হিমোগ্লোবিন জমে পিণ্ড তৈরী করে, যা পরে প্লীহার ভেতরে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। নিয়মিত রক্ত স্থানান্তর করা ছাড়া এর স্থায়ী সমাধান নেই।

প্রশ্ন হলো, এই সিকল-সেল অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া হয় কেন? এর উত্তরঃ ম্যালেরিয়া। প্রতিটি ম্যালেরিয়া-প্রবণ অঞ্চলেই এই দু’টি রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী। বাবা এবং মা-উভয়ের কাছ থেকেই এক একটি করে পরিবর্তিত হিমোগ্লোবিন জিন পেলেই সন্তানের এ রোগগুলো হতে পারে। বহু জিনেটিক রোগই এভাবে ছড়ায়; ইওরোপীয়দের ভেতর সবচেয়ে বেশী যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস। যে জীবাণুটি ম্যালেরিয়া ঘটায়, কোন একটি অজানা কারণে তা সিকল সেল অ্যানিমিয়া বা থ্যালাসেমিয়া’র বাহককে আক্রান্ত করতে পারেনা, বরং বাহকের শরীরে এই দু’টি রোগের বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। অপরদিকে, বাহকের শরীরে এই প্রতিরোধের জন্যই পরবর্তী প্রজন্মগুলোর মাঝে এই রোগগুলো ছড়াবার সূযোগ থাকে। প্রকৃতি এভাবেই এক আশ্চর্য নিষ্ঠুর খেলা খেলে নতুন-পুরানের একটি সাম্যাবস্থা বজায় রাখে। ম্যালেরিয়ার কারণেই যেহেতু হিমোগ্লোবিনের জিনের এই মিউটেশনগুলো ঘটে, তাই কোন অঞ্চলকে ম্যালেরিয়া-মুক্ত করে ফেললেও থ্যালাসেমিয়া দূর করা সম্ভব হয় না। সার্ডিনিয়া, ইতালী, গ্রিস, সাইপ্রাস, তুরস্ক ইত্যাদি অঞ্চলে ঠিক তাই-ই হয়েছে। সেখানে ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী মশাটিকে সম্পূর্ণরূপে নিকেশ করে ফেলা হয়েছে, কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে।

বাইবেল-কোরানে আমরা যে আদম-ইভের গল্প পড়ি, তার একটি জিনগত ব্যখ্যা দেয়া সম্ভব! মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ যে আমরা শুধু মা’র কাছ থেকে পাই সে তো আগেই জেনেছি; আমাদের মা’রা পেয়েছেন তাঁদের মায়েদের কাছ থেকে, তাঁরা পেয়েছেন তাঁদের মায়েদের কাছ থেকে্‌…এভাবে পেছনের দিকে ক্রমাগত যেতে থাকলে শেষ পর্যন্ত ২ লাখ বছর আগে আফ্রিকার একজন মা’র কাছে গিয়েই ঠেকতে হয়, যাঁর হাত ধরে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এসেছে! এই নারীকে বলা হয় ‘মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ’। এই মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ যে পৃথিবীর প্রথম নারী ঠিক তা নয়, সে সময়ে মনুষ্য প্রজাতির আরো নারী নিশ্চয়ই ছিলেন, কিন্তু তাঁদের উত্তরসূরী কন্যারা বা নাতনীরা টিকে থাকতে পারেনি ডারউইনীয় ন্যাচারাল সিলেকশনের জন্যই। ইভের কন্যা, তস্য কন্যা, তস্য তস্য কন্যারা বেঁচে গেছেন বলেই আমরা আসতে পেরেছি-এটাই এখন সবচেয়ে গৃহীত বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা। কিভাবে বিজ্ঞানীরা এই ২ লাখ বছরের হিসেবে আসলেন? সেই যে মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র মিউটেশনের হার, প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার বছরে একটি করে মিউটেশন হয়, তার কথা মনে আছে তো? পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের ডিএনএ নমুনায় কতগুলো মিউটেশন আছে সেটি বের করে তার সাথে মিউটেশনের হার গুণ করে তাঁরা এই সময়টা পেয়েছেন। ব্যাপারটি যতো সহজে বলে ফেললাম, অমনও ঠিক নয়, তবে মোটামুটি ধারণাটি এমনই।

মাইটোকন্ড্রিয়াল ইভ-এর হাত ধরে পরবর্তীতে যে নারীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে গত ২ লাখ বছরে নতুন নতুন জনগোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছেন, এদের বলা হয় হ্যাপলোগ্রুপ। সাইকস ধারণা করেছেন ইভ-এর পর ৭ জন নারীর হাত ধরে বাকী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ ছড়িয়েছে, যাদের তিনি ইভের কন্যা বলে অভিহিত করেছেন। এ বইয়ের প্রথমার্ধে জিন বিজ্ঞান নিয়ে যাবতীয় তথ্য প্রদানের পর সাইকস বাকী অর্ধেকে তাঁর সেই কল্পিত ৭ জন নারীর কল্পিত গল্প বলেছেন। সেটুকু পড়া নিতান্তই সময়ের অপচয়। এই শ’খানেক পাতা অতিরিক্ত যোগ করায় বইয়ের বাহ্যিক ওজন বেড়েছে বটে, কিন্তু বইটির গ্রহণযোগ্যতার যে ওজন, সেটি অনেকটাই কমে গেছে।



April 17,2025
... Show More
Bryan Sykes has written a supremely fascinating book. If you are interested in DNA or genetics or ancestry or science at all, you will love this book. If you've ever HEARD of DNA or genetics or science, or tried to trace your family tree, you will love this book :)

Dr Sykes is one of the progenitors of modern DNA research. He was the first to propose that the mitochondrial DNA, which is inherited in an unbroken line from our mothers (and they from their mothers, etc), can be used to trace ancestry.

The book starts with the discovery of a frozen corpse, dabbles in hamster breeding, segues into royalty, and ends with the knowledge of the maternal legacies worldwide.

The frozen corpse is dubbed, appropriately, The Iceman. In 1991, two climbers come across a body in the Italian Alps. While everyone at first thinks it's perhaps the discovery of a missing climber, the primitive ice pick and other tools start the slow dawning of realization that this is a find of international importance—the body of a man who is thousands of years old. Eventually carbon dating put the Iceman at 5000-5350 years old. DNA was extracted and analyzed, and it was the same as modern Europeans. In fact, the mDNA was precisely the same as one of the samples Sykes had taken from a friend during his mDNA studies. This meant that Marie, his friend, had an unbroken genetic link between her and the Iceman (or technically with his mother).

Sykes was fascinated by the ability to find this connection, and by the fact that the mDNA stayed intact through thousands of years of descendants. He decided to collect as many samples as possible from all over the world to see if there were maternal lines that modern people descended from, and if so, where, and how many.

In the initial mDNA studies, the golden hamster was used as a test. Supposedly, ALL the golden hamsters on earth descend from one female. Golden hamsters are the breed of those popular pet hamsters, and also are the ones used in laboratories. If they all truly come from one female, they should all have the same mDNA, and it should be intact through the many many MANY generations of hamsters we have now. This turned out to be in fact 100% accurate. All the golden hamsters on earth are closely related through their mothers. All the golden hamsters that have ever been have descended from ONE female hamster.

The mDNA of Pacific Islanders was used to finally solve an old argument--did Pacific Islanders migrate from the Americas, and go Westward? or did they originate from the far East of Asia and come East? There was evidence to support both theories, but the Mitochondrial DNA revealed the truth.

It was instrumental in the mystery of the bodies discovered in Russia, that were thought to be the last of the Romanovs, the Tsar Nicholas II and his family, who were executed in 1918.

Another puzzle that Sykes' studies figured out was whether modern Europeans came from the original hunters and gatherers, or from the later farming peoples.

I went to flip through this book when I started this review, and ended up reading it cover to cover AGAIN. It is one of my favorite science books, and riveting is truly the best word to describe it. It reads like a suspense thriller! Highly recommend to everyone!
 1 2 3 4 5 下一页 尾页
Leave a Review
You must be logged in to rate and post a review. Register an account to get started.